ad

Friday, January 23, 2015

মৃত্যু নিয়ে হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর বই এর কিছু লাইন ................

মৃত্যু নিয়ে হুমায়ুন আহমেদ স্যার এর বই এর কিছু লাইন ................উনাকে যাদের ভালো লাগে না তারা এই পোস্ট ইগ্নোর করে যান... উল্টা পাল্টা কমেন্ট করে অন্যের ভালো লাগার অনুভূতিতে আঘাত করবেন না ... উনার সম্পর্কে উল্টা পাল্টা কমেন্ট করার আগে নিচে আমার লেখা নোটঃ পড়ে নিন ...।
১)মৃত্যুর সময় পাশে কেউ থাকবে না,এর চেয়ে ভয়াবহ বোধ হয় আর কিছুই নেই।শেষ বিদা্য় নেয়ার সময় অন্তত কোনো একজন মানুষকে বলে যাওয়া দরকার।নিঃসঙ্গ ঘর থেকে একা একা চলে যাওয়া যা্য় না,যাওয়া উচিত নয়।এটা হৃদ্য়হীন ব্যাপার।(দেবী।পৃ:৪৮)
২)মৃত্যু টের পাওয়া যায়।তার পদশব্দ ক্ষীন কিন্তু অত্যন্ত তীক্ষ্ণ।(তোমাকে।পৃ:৬৩)
৩)বেঁচে থাকার মতো আনন্দের আর কিছু নেই।(আগুনের পরশমনি।পৃ:৯৭)
৪)অসম্ভব ক্ষমতাবান লোকেরা প্রা্য় সময়ই নিঃসঙ্গ অবস্থায় মারা যায়।(আকাশ জোড়া মেঘ। পৃ:২৭)
৫)আমরা জানি একদিন আমরা মরে যাব এই জন্যেই পৃথিবীটাকে এত সুন্দর লাগে।যদি জানতাম আমাদের মৃত্যু নেই তাহলে পৃথিবীটা কখনোই এত সুন্দর লাগতো না।(মেঘ বলেছে যাব যাব।পৃ:১৫৮)
৬)মৃত মানুষদের জন্য আমরা অপেক্ষা করি না।আমাদের সমস্ত অপেক্ষা জীবিতদের জন্য।(অপেক্ষা।পৃ:১৪৬)
৭)যে বাড়িতে মানুষ মারা যায় সে বাড়িতে মৃত্যুর আট থেকে নয় ঘন্টা পর একটা শান্তি শন্তি ভাব চলে আসে।আত্মীয় স্বজনরা কান্নাকাটি করে চোখের পানির স্টক ফুরিয়ে ফেলে।চেষ্টা করেও তখন কান্না আসে না।তবে বাড়ির সবার মধ্যে দুঃখী দুঃখী ভাব থাকে।সবাই সচেতন ভাবেই হোক বা অচেতন ভাবেই হোক দেখানোর চেষ্টা করে মৃত্যুতে সেই সব চেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছে।মূল দুঃখের চেয়ে অভিনয়ের দুঃখই প্রধান হয়ে দড়ায়।একমাত্র ব্যাতিক্রম সন্তানের মৃত্যুতে মায়ের দুঃখ।(হিমুর রুপালী রাত্রি।পৃ:১৮)
৮) বিবাহ এবং মৃত্যু-এই দুই বিশেষ দিনে লতা পাতা আত্মীয়দের দেখা যায়।সামাজিক মেলা মেশা হয়।আন্তরিক আলাপ হ্য়।(একজন হিমু কয়েকটি ঝি ঝি পোকা।পৃ:৮১)
৯)আসল রহস্য পদার্থ বিদ্যা বা অংকে না-আসল রহস্য মানুষের মনে।আকাশ যেমন অন্তহীন মানুষের মনও তাই।পৃথিবীর বেশির ভাগ অংকবিদ আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতে ভালোবাসতেন।আকাশের দিকে তাকালে জাগতিক সব কিছুই তুচ্ছ মনে হয়।We are so insignificant.আমাদের জন্ম মৃত্যু সবই অর্থহীন।(আমিই মিসির আলি।পৃ:৭৯)
১০)মৃত্যু হচ্ছে একটা শ্বাশত ব্যাপার।একে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।আমরা যে বে্ঁচে আছি এটাই একটা মিরাকল।(কবি।পৃ:১৯১)
১১)মানব জীবন অল্প দিনের।এই অল্প দিনেই যা দেখার দেখে নিতে হবে।মৃত্যুর পর দেখার কিছু নেই।দোযখে যে যাবে-সে আর দেখবে কি-তার জীবন যাবে আগুন দেখতে দেখতে।আর বেহেশতেও দেখার কিছু নাই।বেহেশতের সবই সুন্দর।যার সব সুন্দর তার সৌন্দর্য বোঝা যায় না।সুন্দর দেখতে হ্য় অসুন্দরের সংগে।(কালো যাদুকর।পৃ:৭৮)
১২)সব মৃত্যুই কষ্টের,সুখের মৃত্যু তো কিছু নেই।(কোথাও কেউ নেই।পৃ:৪০)
১৩)দুঃখ কষ্ট সংসারে থাকেই।দুঃখ কষ্ট নিয়েই বাঁচতে হয়।জন্ম নিলেই মৃত্যু লেখা হয়ে যায়।(কোথাও কেউ নেই।পৃ:৩৬)
১৪)শোকে দুঃখে মানুষের মাথা খারাপ হয়ে যায়।কবর দিয়ে দেয়ার পর নিকট আত্মীয় স্বজনরা সবসময় বলে-"ও মরে নাই"।(ছায়া সঙ্গী।পৃ:১৪)
১৫)ঘুম হচ্ছে দ্বিতীয় মৃত্যু।(পারাপার। পৃ:২২)
১৬)মানুষ হচ্ছে একমাত্র প্রানী,যে জানে একদিন তাকে মরতে হবে।কেননা অন্য কোন প্রানী মৃত্যুর জন্য প্রস্তুতি নেয় না,মানুষ নেয়।(একা একা।পৃ:১০)
১৭)মৃত্যু ভয় বুদ্ধিমত্তার লক্ষন।শুধু মাত্র নির্বোধদেরই মৃত্যু ভয় থাকে না।(নি।পৃ:২৫)
১৮)মৃত্যুতে খুব বেশি দুঃখিত হবার কিছু নেই।প্রতিটি জীবিত প্রানীকেই একটা নির্দিষ্ট সময়ের পর মরতে হবে।তবে এ মৃত্যু মানে পুরোপুরি ধ্বংস নয়।মানুষের শরীরে অযুত,কোটি,নিযুত ফান্ডামেন্টাল পার্টিকেলস যেমন-ইলেকট্রন,প্রোটন,নিউট্রন-এদের কোন বিনাশ নেই।এরা থেকেই যাবে।ছড়িয়ে পড়বে সারা পৃথিবীতে।কাজেই মানুষের মৃত্যুতে খুব বেশি কষ্ট পাবার কিছু নেই।(নি।পৃ:১০)
১৯)অন্য ভুবনের দিকে যাত্রার আগে আগে সবাই প্রিয়জনদের দেখতে চায়।(আমার আপন আধার।পৃ:৭১)
২০)যে মানুষ মারা যাচ্ছে তার উপর কোন রাগ কোন ঘেন্না থাকা উচিত নয়।(নবনী।পৃ:১০৯)
নোটঃ
--------
হুমায়ুন আহমেদ স্যারের নাস্তিকতার ব্যাপারে কেউ সুস্পষ্ট প্রমাণ দিতে পারবে বলে মনে হয় না। আমার জানা মতে অর্থাৎ আমি যতো বই পড়েছি ... তাঁর কোন লেখাতেই নামাজ, কোরআন কখনই অসম্মানিত হয়নি । কিংবা পর্দা নিয়ে ব্যাঙ করা হয়নি । স্যারের প্রায় প্রতিটি লিখাতেই টুপী পরা ভদ্রলোক কিংবা তসবিহ হাতে কোন নারীকে পাওয়া গেছে ।
এবং তার লিখনির মইধ্যে মাঝে মাঝে হাদীস উইঠা আইত যার প্রত্যেকটাই ছিল সহীহ্ হাদীস। আচ্ছা একজন নাস্তিকের কি প্রোয়োজন লেখার মইধ্যে হাদীস দেয়ার? তাও আবার সহীহ্ হাদীস। শোনা যায় স্যার মৃত্যুর আগে তার প্রিয় কয়েকটা কুরআনের আয়াত পড়ছিলেন। আচ্ছা তিনি যদি নাস্তিক হইতেন তাইলে তিনি মৃত্যুর আগে কুরআনের আয়াত গুলা কেন পড়ছিলেন?
যারা স্যারকে নাস্তিক বলেন তারা শোনেন,একজনার সম্বন্ধে আগে না জাইনা স্রেফ শুনে মন্তব্য করা উচিত না ...।
তাছাড়া তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম তিনি আস্তিক আস্তিক হলেই কি জান্নাতে যাওয়া নিশ্চিত ?
যারা আজ হুমায়ুন স্যারকে নাস্তিক বলছেন, তাদের কাছে প্রশ্নঃ - আপনি তো আস্তিক ।
আপনি কি ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করেন ? -
আপনি কি সদা সত্য কথা ও সত্যের পথে চলেন ? -
রাস্তায় ক্ষুদার্থ কে দেখে এগিয়ে যান ? -
পরনারীর দিকে কি আপনার চোখ যায়না ?
সে চোখে কি কাম জাগেনা ?
কারো সম্পর্কে মন্তব্য করার আগে তার সমরকে জ্ঞান অর্জন করুন । সাহিত্য ও ধর্মের সঠিক ব্যাখ্যা জেনে আসুন ।
কারো বই না পড়ে স্রেফ শুনে তাকে নাস্তিক প্রমান করে কি বেহেস্তের একটা খালি সিট আপনি পেয়ে যাবেন ভাবছেন ?
তাছাড়া উনি নাস্তিক কি আস্তিক সেটা আমার দেখার বিষয় না । উনি একজন সাহিত্যিক এটাই আমার বড় কথা । আল্লাহ পাকের সৃষ্টির সেরা মানুষকে তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ভালবেসে গিয়েছেন । হতাশাগ্রস্ত ও দরিদ্র জনসাধারন কে ছোট ছোট আনন্দ দানের মাঝে বাঁচতে শিখিয়েছেন ।উনি দেখিয়ে দিয়েছেন সহজবোধ্যভাবে কিভাবে পাঠকের মন ছুয়ে যেতে হয়, অতি সহজ লেখা দিয়েও জীবনের কঠিনতম দর্শন কে কিভাবে পাঠকের মাথায় ঢুকিয়ে দিতে হয়।পরাজিত বেকার যুবকদের নতুন স্বপ্নে উদ্দীপ্ত করেছেন । এই জন্যই হুমায়ুন স্যার পাঠককুলের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন যুগ যুগ ধরে । আর নিশ্চয়ই তার এই অবদান, সুবিচারক মহান আল্লাহ পাকের বিবেচনার বাইরে থাকবে না ?
মৃত মানুষ সম্পর্কে বাজে আলোচনা বা মন্তব্য না করাই ভাল। তিনি এখন যেখানে আছেন আমরা নিজেরা তাকে নিয়ে বিচার বিশ্লেষণ না করে এর ভারটা আল্লাহর উপর ছেড়ে দিলেই পারি।

No comments:

Post a Comment

Ad

Popular Posts